মধুর ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা -Top 10 Health Benefits Of honey
Health Tips- মধুর যাদু।সকাল বেলা ১ চামচ মধু আপনার দিনের শুরুটাকে মধুর মত মিষ্টি করে দিতে পারে।পৃথিবীতে একটি মাত্র খাবার আছে যা কখনো নষ্ট হয় না, বলুনতো খাবারটি কি হ্যাঁ আপনি ঠিকই ভাবছেন সেটা মধু। প্রাচীনকাল থেকেই মধু এক দিকে যেমন একটি খাদ্য তেমনি অপর দিকে একটি মহামূল্যাবান ঔষধ।মধু আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং নিয়মিত মধু সেবন করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ফলে অসংখ্য রোগবালাই থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। মধুর রয়েছে হাজারো স্বাস্থ্য উপকারিতা ।এখানে বিজ্ঞানের দ্বারা সমর্থিত মধুর ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা তুলে ধরা হলো –
10 Health Benefits Of honey-Health Tips-
মধুর খাদ্য উপাদান- মধুতে প্রায় ৪৫ টি খাদ্য উপাদান বিদ্যমান থাকে।সাধারনত ফুলের পরাগের মধুতে ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ, ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ ফ্রুক্টোজ, ০.৫ থেকে ৩.০ শতাংশ সুক্রোজ এবং ৫ থেকে ১২ শতাংশ মন্টোজ।আরো থাকে ২২ শতাংশ অ্যামাইনো এসিড, ২৮ শতাংশ খনিজ লবন এবং ১১ ভাগ এনজাইম।এতে কোন চর্বি নেই।১ চা-চামচ (২১ গ্রাম) মধুতে থাকে ৬৪ ক্যালরি।
মধুর ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা (10 Health Benefits Of honey)- Health Tips
১। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে- মধু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।গবেষনায় প্রমানিত যে, মধুতে রয়েছে উচ্চ শক্তি সম্পন্ন অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল এজেন্ট।এই এজেন্ট শরীরের রোগ জীবানুর বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীরকে রাখে রোগ মুক্ত।
২। ক্যান্সার ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুকি কমায়- মধু রক্তের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মান বৃদ্ধি করে।আর এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং কিছু ধরনের ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে সাহায্য করে।প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস হালকা গরম পানির সাথে এক চা-চামচ মধু ও অল্প দারুচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে পান করতে পারেন ।
৩। উচ্চ রক্তচাপ কমায়- প্রতিদিন মধু খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমে।প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় খাবার ১ ঘন্টা আগে দু চা-চামচ মধুর সাথে রসুনের রস মিশিয়ে সকাল ও সন্ধ্যায় নিয়মিত এই মিশ্রন পান করতে হবে ।
৪। ওজন কমায়- মধুতে কোন চর্বি নেই তাই প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খালি পেটে খেলে ওজন দ্রুত কমে যায়।চিনির বদলে মধুর ব্যবহার মুটিয়ে যাওয়ার হাত থেকেও রক্ষা করে।
৫। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়- উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা হৃদরোগের একটি গুরুত্বপূর্ন ঝুঁকি।প্রতিদিন মধু খেলে দেহে এলডিএল (খারাপ) কোলেস্টেরল হ্রাস করে এবং এইচডিএল (ভাল) কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে।তাই দিনে অন্তত ১ বার চা-চামচ মধু খেয়ে নিন যেকোন সময়।
৬।যৌন দুর্বলতায়- মধু যৌন দুর্বলতায় দারুন কাজ করে।যাদের যৌন দুর্বলতা আছে তারা প্রতিদিন মধু ও ছোলা মিশিয়ে খেতে পারেন তাতে উপকার পাওয়া যায়।এছাড়াও দৈহিক ও যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন রাতে এক গ্লাস গরম দুধের সাথে ২ চা-চামচ মধু মিশিয়ে খেলে খুব দ্রুত ভাল ফল পাবেন।
৭।দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়- মধু চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।প্রতিদিন গাজরের রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়।
৮। ঠান্ডা কাশি দূর করে- মধু ঠান্ডা, কাশি, কন্ঠনালির ক্ষত, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি সমস্যা থেকে দ্রুত সারিয়ে তুলতে পারে।শিশুদের দীর্ঘ দিনের কাশি বন্ধ করতে পারে এই মধু।কাশির জন্য মূল ধারার ঔষধ সবসময় কার্যকর হয় না এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে।এক গবেষনায় দেখা গেছে কাশি সারিয়ে তুলতে দুটি সাধারন কাশির ঔষধের চেয়েও মধু ভাল কাজ করে।তবে ১ বছরের কম বয়সের শিশুদের মধু দেয়া উচিত নয়।১ বছরের বেশি বয়সের শিশুদের জন্য মধু একটি প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ কাশি suppressantহিসেবে কাজ করতে পারে।এজন্য ১ চা-চামচ মধুর সাথে সমপরিমান আদার রস মিশিয়ে খেতে পারেন।
৯। ত্বকের যত্নে- এটির অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুন বিশেষত ত্বকের জন্য বেশ উপকারি।ত্বকের শুষ্কভাব কমিয়ে আনতে মধুর তুলনা নেই।সকালে মধু ত্বকে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।এতে ত্বক হবে মসৃন ও সুন্দর।ত্বকে নিয়মিত মধু ব্যবহার করলে ত্বকের দাগও চলে যায়। রোদে পোড়া ত্বককে স্বাভাবিক করতেও মধু গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে। এজন্য প্রতিদিন ১ চা-চামচ মধুর সাথে পানি মিশিয়ে প্রতিদিন মুখে ফেস প্যাকের মত লাগান। ঠোটের যত্নেও মধু ব্যবহার করা হয়।
১০। অনিদ্রায়- মধু অনিদ্রায় খুব ভালো ওষুধ।প্রতিদিন রাতে এক গ্লাস হালকা গরম পানির সাথে ২ চা-চামচ মধু মিশিয়ে খেলে এটি গভীর ঘুম ও সম্মোহনের কাজ করে।
আসলে মধুর যত উপকারিতা আছে তা লিখে শেষ করা যাবে না। এছাড়াও মধুর আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। এক কথায় বলা যায় যে, মধু হচ্ছে সর্ব রোগের মহৌষধ।প্রতিদিন ১ চামচ মধু আপনাকে সারা বছর জুড়ে সুস্থ রাখতে পারে।মধুর অপকারিতা নেই বললেও চলে তবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মধু গ্রহন নিষেধ।


0 Comments: